ইন্দোনেশিয়ার তোরজা সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রতি বছরের আগস্টে মাসে স্বজনদের মৃত দেহ কবর থেকে তুলে জীবত স্বজনদের সাথে পরিচায় করিয়ে দেন সেই সাথে কথা বলারও চেষ্টা করেন। পূর্বপুরুষদের ওই কঙ্কালটির চোখে পরানো হয় সুন্দর ‘সানগ্লাস’। অনেকে আবার সেলফি তুলেন সেই সাথে তাদের সঙ্গে চলে ধুমপানও!
ইন্দোনেশিয়ায় প্রায় এক শতাব্দী ধরে চলে আসছে এই বিশেষ উৎসব। ওই দেশের দক্ষিণ সুলাওয়াসির তোরজা নামের একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যে চালু রয়েছে এই বিশেষ প্রথা। বার্ষিক এই উৎসবের নাম ‘মেনে’। বিশেষ এ উৎসবে পূর্বপুরুষদের মৃত দেহ পরিষ্কার করে নতুন পোশাক পরিধান করে আলাপতারিতার সময় চলে ধুমপানও। এ সময় লাশের মুখে সিগারেট জ্বালিয়ে দেয়া হয়। চলে একসাথে খাওয়া দাওয়া। একজন জীবিত মানুষের মত লাশের সাথে আচরণ করা হয়। আর এটাই এই সম্প্রদায়ের রীতিনীতি।
ইন্দোনেশিয়ার এই তোরজা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব এটি। তারা মনে করেন এই উদযাপন মৃত্যু ও জীবনের মধ্যে সংযোগ তৈরি করে। মৃতরা তাদের মধ্যেই বাস করে। তাদেরকে দেখে। এমনকি তাদের শুভ কামনা করে।
এই সম্প্রদায়ের লোকেরা মনে করেন, তারা মারা যাননি বরং তারা অসুস্থ। তাদের মৃত্যুকে সম্মান জানিয়ে এটা করা হয়।
এই উৎসব দেখতে পর্যটকদের যেতে কোন বাধা নেই। বরং এই সম্প্রদায় উৎসবের অংশ হতে উৎসাহ দিয়ে থাকে। মৃতের পর পরিবারের সদস্যদের দেহ মমি করার জন্য মাস, কখনও বছর পর্যন্ত নিজেদের ঘরের মধ্যে সংরক্ষণ করা হয়।
আবার কখনও মৃতদের জন্য তৈরি করা নির্দিষ্ট ঘরে লাশ রাখা হয়। এরপর মমি তৈরি হলে কবর দেয়ার আনুষ্ঠানিকতা ও শোকসভার আয়োজন করা হয়।
এই উৎসব শেষ হওয়ার পর আবার পোশাক খুলে বিভিন্ন উপহার সমেত লাশ কফিনে রেখে দেয়া হয়। ইন্দোনেশিয়ার এই তোরজা সম্প্রদায় প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী।